প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনায় বিএনপি সন্তুষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের কোনো সুনির্দিষ্ট ডেডলাইন আমাদের দেননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রায় দুই ঘণ্টার বৈঠক শেষে বের হয়ে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ জানাননি। তিনি ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলেছেন। আমরা বলেছি ডিসেম্বর নির্বাচনের কাটঅফ সময়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা একেবারেই সন্তুষ্ট নই। আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।
তিনি ফখরুল বলেন, ডিসেম্বর হলো তাদের কাটঅফ টাইম। ডিসেম্বর নির্বাচন না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। তখন সেটি নিয়ন্ত্রণ করা বেশ কঠিন হবে।
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন এই যে সময় এখন প্রধান উপদেষ্টা দিলেন এতে কি সময় প্রলম্বিত হচ্ছে বলে মনে করেন কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি (প্রধান উপদেষ্টা) ডিসেম্বর থেকে জুন বলেছেন, উনি এই কথা বলেননি যে, এটা ডিসেম্বরে হবে না। কিন্তু জুন পর্যন্ত নিয়েছেন। আমরা এই কথাটা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি যে, আমাদের কাটঅফ টাইম হলো ডিসেম্বর।
মাসের এই শিফটিংটা কেন, জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা তো আমি বলতে পারব না। এটা উনারা বলতে পারবেন।
সর্বশেষ গত ১০ ফেব্রুয়ারি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল যুমনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সময়ে তিনি বিএনপি প্রতিনিধি দলকে বলেছিলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তার সব কার্যক্রম চলছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা আবারও আপনাদের সামনে আসব দলের মধ্যে আলোচনা করে এবং আমাদের অন্যান্য মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের আলোচনার প্রধান যে বিষয়টা ছিল সেটা হচ্ছে, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ যেটা আমরা বেশ কিছুকাল থেকে বলে আসছি। সেই বিষয়ে তার (প্রধান উপদেষ্টার) সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা বলেছি যে, পরিস্থিতি আছে এবং দেশের যে অবস্থা, তাতে করে আমরা বিশ্বাস করি এখানে একটি দ্রুত এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। একই সঙ্গে চলমান যে সংস্কার কমিশনগুলো করা হয়েছে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে, আপনারা জানেন যে, সেগুলোতে আমরা সম্পূর্ণভাবে সহযোগিতা করছি। গত কয়েকদিন আগের সংস্কার কমিশনের কাছে আমাদের মতামতগুলো দিয়েছি। আগামীকাল আমাদের সঙ্গে বৈঠক আছে।
তিনি বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, যে বিষয়গুলো ঐকমত্য হবে সব দলগুলোর... সেগুলো নিয়ে আমরা একটা চাটার্ড করতে রাজি আছি। তারপর আমরা নির্বাচনের দিকে চলে যেতে পারি এবং বাকি যেসব সংস্কারে আমরা ঐকমত্য হবো, সেগুলোকে বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেবেন আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচিত হয়ে আসলে। এটাই ছিল আমাদের (বিএনপির) মূল কথা।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে যমুনায় প্রবেশ করে বিএনপির প্রতিনিধি দল। এরপর প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, নজরুল ইসলাম খান এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আপনার মতামত লিখুন :