নির্বাচনের আগেই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে গণ-হত্যার বিচার দাবি করেছেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, বিগত সময়ে যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের বিচার আগে নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে নির্বাচন আরো বিলম্বে দেওয়া হোক।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকালে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দলীয় কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা অতীত নিয়ে কামড়া-কামড়ি চাই না। তবে যারা গণহত্যা, ছাত্র হত্যা, গুম করেছে তাদের বিচার অবশ্যই অগ্রাধিকার দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিশোধের জন্য নয় মানবসমাজকে কলঙ্কমুক্ত করতেই তাদের বিচার করতে হবে।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও আমাদের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন ধর্মের মানুষকে পাহারা দিয়েছেন। নেতাকর্মীদের কেউ কখনোই কোনো ধর্মের মানুষের ওপর, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডায় আঘাত করেনি। আমাদের নেতাকর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে টানা ১৫ দিন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাহাড়া দিয়েছে। সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি আমরা।
জামায়াতের নেতাকর্মীরা সৎ ও আদর্শিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা কোনো জলমহাল বালু মহাল, ফুটপাত, বাসস্টেশন দখল করেনি। আমাদের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। নেতারা মামলা বাণিজ্যর সাথেও জড়িত না। তবে কেউ অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
আওয়ামী লীগে রাজাকার বেশি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, গত জালেম সরকার সারা দেশে ১০ হাজার রাজাকারের তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় ৮০ ভাগ লোকই ছিল আওয়ামী লীগের। তারাই অপকর্ম করেছে। তারা আমাদের কথায় কথায় বলতে অমুক দেশে তমুক দেশে যাবার জন্য। এখন তারাই বিনা পাসপোর্টে, বিনা টিকেটে বিনা ভিসায় পালিয়ে গেছে।
দেশবাসীর কাছে সমর্থন চেয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় যেতে পারলে সুনামগঞ্জকে উন্নয়নের চুড়ায় পৌঁছে দেব। এই জেলার সম্পদ ও সম্ভাবনা আছে। যদি আমরা ক্ষমতায় যেতে নাও পারি তা হলে দাবি আদায়ের জন্য আপনাদের সাথে আন্দোলন করে দাবি আদায় করব উন্নয়নের জন্য। আমরা যদি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিব। তবে আমাদের শিক্ষা হবে কর্মমূখি শিক্ষা। যাতে পড়াশোনা করার সাথে সাথেই তারা কাজে লাগতে পারে।
তিনি বলেন, আড়াইশ বছর আগে ব্রিটিশ, পর্তুগীজ, মোগলরা আমাদের দেশে কাজ করতে আসতো। কিন্তু এখন আমাদের মেধাবীরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। মেধা সঞ্চয় করে তারা আর ফিরছে না। তবে সেই দেশ এখনো গড়া সম্ভব। যদি আমাদের নেতৃত্ব দেশপ্রেমীক হয়। আমাদের জাতীয় নেতৃত্ব ধোঁকাবাজির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসলেই এটা সম্ভব।
সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদের সভাপতিত্বে কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগর উত্তরের আমীর ফখরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট জেলা শাখার আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
আপনার মতামত লিখুন :