বাংলাদেশে আরাকান আর্মির প্রবেশ এবং উৎসবে যোগদান প্রসঙ্গে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। বুধবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নগরের সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া আরাকান আর্মির ভিডিও নিয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এর আগে, তিনি প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভিডিওতে যেভাবে দেখানো হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, যে হারে ভিডিওতে এসেছে সেটি সঠিক নয়। টিকটকের ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। কিন্তু সব যে সত্যি তাও না। আবার সব যে মিথ্যা তাও না। তবে আরাকান আর্মি অনেক দিন ধরে এ অঞ্চলে আছে, মিয়ানমার সীমান্ত তাদের দখলে। এর মধ্যে অনেকে এই পাড়ে (বাংলাদেশ অংশে) বিয়েও করেছে। এটা তো স্বীকার করতেই হবে। এতে করার কিছু নেই বলে জানান উপদেষ্টা।
তবে আশ্বস্ত করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত পুরোপুরি রক্ষিত আছে। আরাকান বর্ডার ইজ ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি কিন্তু ওদের বর্ডার তো আরাকান আর্মির দখল করে আছে। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়। আবার আরাকান আর্মিও পয়সা নেয়। এক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। যদিও আমরা সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, পাহাড়ের অশান্ত অবস্থা তো আপনারা দেখেননি। আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার ছিলাম, সিইও ছিলাম এবং বিগ্রেড কমান্ডার ছিলাম। তুলনা করতে গেলে পাহাড় পুরোটা শান্ত। ছোটখাটো অপহরণ তো সমতলেও হচ্ছে। খালি পাহাড়কে কেন দোষ দেন। পাহাড় আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। অনেক শান্ত আছে।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। বাঘাইহাটে ল্যান্ডমাইন দিয়ে সৈন্যবোঝাই পিকআপ উড়াই দিছে। সে সময় খবরগুলো আসেওনি। ওই এলাকায় যাতায়াতের সুবিধাও ছিল না। এখন পাহাড়ের অবস্থা এত ভালো ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিভিন্ন অভিযানের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। যে ঘটনা ঘটে সত্যটা আপনারা অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন। এতে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। অনেকে ঘটনার সত্যটা প্রকাশ করে না। তদন্ত করে দেখা যায়, ঘটনাটা সত্য না। এতে অসুবিধা হয়। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকরা এই সুবিধাটা নেয়। জানেন যে তারা মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে।
আপনার মতামত লিখুন :