binodonerpadmaful
ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

বিষণ্নতা কাটানোর ব্যায়াম


বিনোদনের পদ্মফুল | জীবনযাপন ডেস্ক এপ্রিল ১৭, ২০২৫, ০৯:২৭ এএম বিষণ্নতা কাটানোর ব্যায়াম

মন খারাপ, কিছু ভালো লাগে না- এই ধরনের মানসিক অবস্থা কাটিতে উঠতে চিকিৎসার ছাড়াও উপকার পেতে বেছে নেওয়া যায় নানান ধরনের ব্যায়াম। কারণ বিভিন্ন গবেষণায় নানানভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিষণ্নতার মাত্রা কমাতে শারীরিক কর্মকাণ্ড প্রভাব ফেলতে পারে।
চীনের ‘রেনমিন হসপিটাল অফ উহান ইউনিভার্সিটি’র গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, ব্যায়াম বা শারীরচর্চা ফলে সেরোটোনিন হরমোনের মাত্রা বাড়ে, যেটার সঙ্গে আনন্দ, শান্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধির সম্পর্ক রয়েছে। দেহে আরাম বোধ ও শিথিল হয়। এন্ডোর্ফিন্স হরমোন নিঃসরণ বাড়ে যা মন মেজাজ উন্নত করার পাশাপাশি ভালো বোধ বাড়ায়। দুশ্চিন্তা ও নেতিবাচক ভাবনা দূরে রাখে। আত্ম নিয়ন্ত্রণ ও সম্মান বাড়ায়।
ইয়োগা
অস্ট্রেলিয়ার ‘ইউনিভার্সিটি অফ কুইন্সল্যান্ড’য়ের ‘স্কুল অফ সাইকোলজি’ পরিচালিত ২০২৪ সালের গবেষণাপত্রে বলা হয়, বিষণ্নতার চিকিৎসায় কার্যকর শারীরিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে ইয়োগা।
উপকারিতার মধ্যে আছে-
মেজাজ ও যোগ্যতার পরিধি বাড়ে সময়ের সাথে।
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে।
ধ্যান ও গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের সংমিশ্রণে বিষণ্নতা, মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা কমায়।
বড় সুবিধা হল এই ব্যায়াম করতে কোথাও যেতে হয় না, ঘরেই করা যায়। আর কোনো যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় না।
হাঁটা
উল্লেখিত গবেষণায় আরও জানানো হয়, বিষণ্নতা কমাতে হাঁটা হল আরেকটি কার্যকর ব্যায়াম।
স্বাস্থ্য ও মেজাজ উন্নত করে।
সময়ের তালে শরীরের সহনশীলতা বাড়ে। যেমন হাঁটা দ্রুত হয় বা বেশিক্ষণ হাঁটা যায়।
বাইরের পরিবেশ উপভোগ করা যায়।
তেমন কোনো ব্যায়ামের যন্ত্র ব্যবহার করতে হয় না।
সামাজিক মেলামেশার অন্যতম মাধ্যম হতে পারে। কারণ বন্ধু বা স্বজনদের নিয়ে এই কর্মকাণ্ড করা যায়।
জগিং বা দৌড়ানো
দ্রুত বা ধীরে- যেভাবেই দৌড়ানো হোক না কেনো, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
শক্তিবর্ধক ব্যায়াম
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি বিশেষ করে বিষণ্নতা দূর করতে খুব ভালো কাজ করে ‘স্ট্রেন্থ ট্রেইনিং’ বা শক্তি বাড়ানোর ব্যায়ামগুলো। এসবের মধ্যে রয়েছে-
ভারোত্তলন
ওজন নিয়ে নানান শারীরিক কর্মকাণ্ড যেমন- ওজন নিয়ে হাঁটা
ওজন নিয়ে ইয়োগা করা বা পিলাটিস
উঠবস এবং ‘বুকডন’
‘রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড এক্সারসাইজ’
হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভেল ট্রেইনিং (এইচআইআইটি)
ছোট ছোট বিরতি দিয়ে অতিমাত্রায় কঠিন ব্যায়াম হল ‘এইচআইআইটি’। এই ধরনের শরীরচর্চার সময় হৃদগতি অন্তত ৮০ শতাংশ বাড়ানোর লক্ষ্য স্থির করা হয়। আর এই ধরনের ব্যায়াম করার জন্য পেশাদার প্রশিক্ষক প্রয়োজন হয়। তবে গবেষণায় বলা হয়- সাধারণ ব্যায়ামের চাইতে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ‘হাই ইন্টেনসিটি ইন্টারভেল ট্রেইনিং’ বেশি কার্যকর।
সাইকেল চালানো
নেতিবাচক চিন্তা দূরে সরিয়ে মন মেজাজ উন্নত করতে চাইলে সাইকেল চালানো হতে পারে উৎকৃষ্ট ব্যায়াম। ২০১৬ সালে চীনের ‘দি ফার্স্ট অ্যাফিলিয়েটেড হসপিটাল অফ ডালিয়ান মেডিকেল ইউনিভার্সিটি’র করা গবেষণায় দেখা গেছে- যারা বিষণ্নতায় ভুগছে, সাইকেল চালানোর ফলে দীর্ঘমেয়াদে তাদের মধ্যে উন্নতি হতে দেখা গেছে।
দড়ি লাফানো
চীনের ‘রেনিম হসপিটাল অফ উহান ইউনিভার্সিটি’র ২০২১ সালের করা গবেষণার তথ্যানুসারে- শারীরিক কসরতের মধ্যে দড়ি লাফানোর এমন একটি ব্যায়াম যা বিষণ্নতায় ভোগার পরিমাণ কমায়। যা কিনা ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার মতোই কার্যকর।
দলগত ব্যায়াম
দলেবলে শরীরচর্চায় অংশ নিতে পারলে বিষণ্নতা যেমন ঠেকানো যায় তেমনি সামাজিকভাবেও সাহায্য পাওয়া যায়। ফলে মেজাজের উন্নতির পাশাপাশি অনুপ্রেরণাও কাজ করে।
শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম
যুক্তরাজ্যের ‘ইউনিভার্সিটি অফ সাসেক্স’য়ের ২০২৩ সালের করা গবেষণায় জানানো হয়- যে কোনো ধরনের গভীর শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম মানসিক চাপ মুক্ত করতে পারে।

Side banner