গাজীপুরের টঙ্গী শিল্পাঞ্চল থেকে শুরু করে বেশ কয়েকটি এলাকা দখল করে নিয়েছে কিশোর গ্যাং। চুরি-ডাকাতি, খুন-ধর্ষণ, ছিনতাই-চাঁদাবাজি এবং মাদক, অস্ত্র ও দখল বাণিজ্যসহ এমন কোনো অপরাধ নেই যা এই কিশোররা করে না। শুধু সাধারণ মানুনই নয়, এসব কিশোর অপরাধী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপরও হামলা করেছে। একশ্রেণির গডফাদার আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ায় এদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পান না। দুর্ধর্ষ এসব কিশোর গ্যাং এখন টঙ্গির বেশ কয়েকটি এলাকার আতঙ্ক। অনুসন্ধানে জানা যায়, টঙ্গীবাজার এলাকায় বেডবস এসটি, পূর্ব আরিচপুর এলাকায় বড় পোলাপাইন, গাজীপুরা সাতাইশ এলাকায় বিচ্ছু, এরশাদনগর এলাকায় নষ্ট ছেলে, গাজীবাড়ি এলাকার অলরাউন্ডার, মিরাশপাড়া ও পাগাড় এলাকায় শিকার নামে কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। টঙ্গীতে রয়েছে ১৯টি বস্তি। এর মধ্যে এরশাদনগরের (পুনর্বাসন কেন্দ্র) ৮টি ব্লকে ছোট-বড় ৮-৯টি কিশোর গ্যাং রয়েছে। এছাড়া সব বস্তি ঘিরেই রয়েছে একাধিক কিশোর গ্রুপ। টঙ্গীর বউবাজার, পূর্ব আরিচপুর, নদীবন্দর, পাগাড়, আলেরটেক, মধুমিতা, ভূঁইয়াপাড়া, জামাইবাজার, নতুনবাজার, মরকুন, শিলমুন, কলেজগেট, সফিউদ্দিন রোড, মুক্তারবাড়ি রোড, খাঁপাড়া, দত্তপাড়া বনমালা, সুরতরঙ্গ রোড, দেওড়া, বাদাম, হোসেন মার্কেট, গাজীপুরা, সাতাইশ, টঙ্গীবাজার, হিমারদিঘী, মাছিমপুর, গাজীবাড়িসহ বিভিন্ন বস্তিতে এদের আস্তানা। তুরাগ নদের তীরের একটি বস্তিতে এসব অপরাধীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
জানা যায়, মোহাম্মদ নুরুল মিয়া নামের (৪৬) এক ভুক্তভোগী দত্তপাড়া জহির মার্কেট বাবুল মৃধার বাড়ির ভাড়াটিয়া (টঙ্গী পূর্ব থানা) এলাকায় দীর্ঘদিন যাবত বসবাস করে আসছিলেন। গত ২৭ শে মার্চ সন্ধ্যায় এই কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা তার কাছে টাকা দাবি করেন টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার বসত ঘরে ভাঙচুর চালায়। তার ঘরে থাকা নগদ তিন লক্ষ টাকা মারধর যখম করে নিয়ে যায়, এমনকি যাবার সময় আরো তিন লক্ষ টাকার এটি স্ট্যাম্প এ সই নেয়। প্রতি মাসে ৭৫ হাজার টাকা করে তাদেরকে দিতে হবে এই মর্মে লিখে সে এবং তার বাড়িওয়ালার সই নেয়। তাদের কথা অনুযায়ী চাদার টাকা না দিতে পারায় গত ২৭/ ০৪/২৪ ইং আনুমানিক ৮ ঘটিকার সম ১।স্বপন মৃধা( ১৬)পিতাঃ আব্বাস মৃধা ২। মামুন মৃধা (৩৫) পিতাঃ সাঈদ মৃধা ৩।অপু( ১৯) পিতাঃ আকাম মৃধা ৪।জাহিদ( ২০)অজ্ঞাত আরো ৯/১০ জন এসে নুরুল মিয়ার স্ত্রী হেনা আক্তার কে এলো পাতালি মারধর করেন এবং বিভিন্ন জায়গায় যখন করেন এবং টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন। তাদের এই অপকর্মের কথা বলার সাহস কারো নেই নুরুল মিয়া বলেন আমি এবং আমার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি বর্তমানে আমি তাদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে কিশোররা বিপথে যাচ্ছে। এজন্য সন্তানের গতিবিধির প্রতি অভিভাবকের নজর দরকার বলে মনে করি ।
এ বিষয়ে টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ (অপরাধ দক্ষিণ)আসাদুজ্জামান বলেন, কিশোর গ্যাং আর কিশোর অপরাধী ভিন্ন জিনিস। টঙ্গীতে বস্তি ও ভাসমান লোকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় অপরাধের মাত্রা কিছুটা বেশি।আমরা অভিযোগ পেয়েছি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।
আপনার মতামত লিখুন :