কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডো। সোমবার (৬ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, দল নতুন নেতা নির্বাচন করার পর দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, তার দল লিবারেল পার্টি একজন উত্তরসূরী বেছে নেওয়ার আগ পর্যন্ত দেশের প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধানের দায়িত্বে থাকবেন তিনি।
২০১৫ সালের নির্বাচনে জিতে প্রথমবারের মতো কানাডার প্রধানমন্ত্রী হন ট্রুডো। তারপর আরও দু’টি নির্বাচনে জয়ের সুবাদে টানা প্রায় ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন ৫৩ বছর বয়সী এই নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেছেন, নিজের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর তিনি পদত্যাগের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সফলতার পেছনে পরিবারের ভূমিকা রয়েছে। গত রাতে নৈশভোজের সময় সন্তানদের কাছে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানান।
কানাডার রাজধানী অটোয়ায় এই সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রুডো বলেন, কয়েক মাস ধরে বাধার কারণে পার্লামেন্ট পুরোপুরি অচল হয়ে আছে। একইসঙ্গে কয়েক মাস ধরে উৎপাদনশীলতার ঘাটতি রয়ে গেছে। তিনি বলেন, এখন নতুন করে শুরু করার সময়। কানাডার রাজনীতিতে উত্তাপ কমিয়ে আনার জন্য তা দরকার।
তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে চলা ট্রুডো বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই ‘জটিল’ সময়ে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করার জন্য পার্লামেন্টে একটি নতুন শুরু দরকার। আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত পার্লামেন্ট অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করেছেন তিনি।
ট্রুডো ২০১৫ সালে লিবারেল পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে প্রথমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর প্রায় এক দশক ধরে দেশটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। সর্বশেষ ২০২১ সালে ট্রুডোর নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করে লিবারেল পার্টি। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে কানাডায় নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে দলীয় নেতৃত্ব ও প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হলেন ট্রুডো।
পদত্যাগের জন্য বিরোধীদের পাশাপাশি নিজ দলের মধ্য থেকেও ট্রুডোর ওপর চাপ বাড়ছিল। এখন ট্রুডোর উত্তরসূরি কে হতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা চলছে। সেই তালিকায় ট্রুডোর সরকারের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মার্ক কারনির নাম আলোচনায় রয়েছে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড গেল ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে পদত্যাগের জন্য ট্রুডোর ওপর চাপ বাড়তে থাকে।
আপনার মতামত লিখুন :