binodonerpadmaful
ঢাকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

৭ অভ্যাসে খারাপ কোলেস্টেরল বিদায়


বিনোদনের পদ্মফুল | স্বাস্থ্য ডেস্ক জানুয়ারি ১৪, ২০২৫, ১২:১১ পিএম ৭ অভ্যাসে খারাপ কোলেস্টেরল বিদায়

রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেকেরই। খারাপ কোলেস্টেরল হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি তৈরি করে। এই কোলেস্টেরলের দুশ্চিন্তা চাইলে একঝটকায় দূর করে শুরু করতে পারেন আপনার দিন।
কোলেস্টেরল নিয়ে দুশ্চিন্তাহীন দিন শুরু করতে আপনাকে সকালের ছোটখাটো কিছু অভ্যাসে আনতে হবে হালকা পরিবর্তন। এর মধ্যে আছে খালি পেটে কুসুম গরম লেবুপানি খাওয়া থেকে দ্রুত হাঁটা। আপনার হৃদ্স্বাস্থ্য দিনজুড়ে দারুণ রাখতে এমন চেষ্টা করতেই পারেন।
রক্তের কোলেস্টেরল উপাদানটি কোষ গঠনের জন্য খুব দরকারি। তবে রক্তে এর ঘনত্ব বা মাত্রা বেশি হলে তৈরি হয় সমস্যা। মাত্রার ওপর ভিত্তি করে কোলেস্টেরলকে মোটাদাগে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল), যাকে বলে খারাপ কোলেস্টেরল ও উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল), যা ভালো কোলেস্টেরল নামে পরিচিত।
এলডিএল ধমনিতে চর্বি জমিয়ে হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি করে। অন্যদিকে এইচডিএল রক্তের চর্বিকে যকৃতে পাঠিয়ে দিয়ে ঝুঁকি কমায়। এখন দেখা যাক, সকাল সকাল কোন অভ্যাসগুলো রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল কমায়।
১. কুসুম গরম লেবুপানি
সকালে খালি পেটে কুসুম গরম পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে খান। এটি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার করে চর্বি পরিপাকে সাহায্য করে। লেবুতে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এসব উপাদান খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ধমনিতে প্লাক জমতে বাধা দেয়। এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্যকর দিন শুরুর এটাই সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর তরিকা।
২. আঁশসমৃদ্ধ নাশতা
দিন শুরু করুন দ্রবণীয় আঁশযুক্ত নাশতা দিয়ে। সকালের নাশতায় ওটস বা চিয়াসিডের মতো খাবার অথবা ফলমূল, যেমন আপেল বা কলা থাকতে পারে। দ্রবণীয় আঁশ অতিরিক্ত কোলেস্টেরলকে এক অর্থে বেঁধে রাখে, যাতে তা রক্তপ্রবাহের সঙ্গে মিশতে না পারে। সকালের নাশতায় এই অভ্যাস শুধু খারাপ কোলেস্টেরল কমাতেই সাহায্য করবে না, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকার অনুভূতিও দেবে।
৩. একমুঠো বাদাম
সকালের নাশতায় একমুঠো বাদাম রাখতে পারেন। সেটা হতে পারে কাঠবাদাম বা আখরোট। আবার তিসি, তুলসীবীজ বা অন্য কোনো বাদামও হতে পারে। এসব খাবার ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অসম্পৃক্ত চর্বিসমৃদ্ধ বলে ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। মনে রাখবেন, একমুঠো বাদাম মানে একমুঠোই, এর বেশি নয়।
৪. দ্রুত হাঁটুন
সকালে ২০ থেকে ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটুন। এটা কোলেস্টেরল কমানোর ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলে। হাঁটার মতো নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড জমানো কমিয়ে দেয়। ট্রাইগ্লিসারাইড একধরনের চর্বি, যা শরীরে শক্তি সঞ্চয়ের প্রধান উৎস। কিন্তু অতিরিক্ত ট্রাইগ্লিসারাইড হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো রোগের ঝুঁকি তৈরি করে। সকালের হাঁটা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা পুরো দিন চলার জন্য শরীরে ছন্দ এনে দেয়।
৫. যোগব্যায়াম
সকালে সাধারণ কিছু যোগব্যায়াম ও পেশির সংকোচন-প্রসারণ মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। এসব ব্যায়াম কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। ‘সর্প’ ও ‘সেতু’র মতো সাধারণ যোগাসন রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এসব আসন কার্ডিওভাসকুলার রোগ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। অর্থাৎ সকালে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের যোগব্যায়ামই আপনার দুশ্চিন্তা লাঘবে বড় ভূমিকা রাখবে।
৬. কফির বদলে গ্রিন টি
আপনি কফিপ্রেমী হলে কষ্ট করে সকালে কফিকে ‘না’ বলুন। এর বদলে বন্ধু পাতান গ্রিন টির সঙ্গে। প্রাকৃতিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ঠাসা গ্রিন টি খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। সকালে এক কাপ গ্রিন টি আপনাকে যেমন ঝরঝরে করে তুলবে, তেমনি আপনার হৃৎপিণ্ডকে রোগের হাত থেকে রক্ষাও করবে।
৭. সকালে চিনিযুক্ত খাবারকে ‘না’
সকালের নাশতায় চিনিযুক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবারকে ‘না’ বলুন। অতিরিক্ত চিনি ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায়। সকালে যদি আপনার রসনা চিনিযুক্ত খাবার ছাড়া তৃপ্ত না-ই হতে চায়, তাহলে মধু বা তাজা ফল খেতে পারেন।
এভাবে রোজ সকালে ছোটখাটো কিন্তু ধারাবাহিক পরিবর্তন আনলে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারবেন। তাই আজই এসব অভ্যাস শুরু করুন আর খারাপ কোলেস্টেরলকে বলুন বিদায়।

Side banner