binodonerpadmaful
ঢাকা রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

নওগাঁয় গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছে না প্রগেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স


বিনোদনের পদ্মফুল | মো. খালেদ বিন ফিরোজ মে ১৪, ২০২৪, ০১:৩৬ পিএম নওগাঁয় গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছে না প্রগেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স

নওগাঁয় মেয়াদ পুর্ণ হওয়ার পরও গ্রাহকদের টাকা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে ‘প্রগেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড’ নামে একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জমাকৃত টাকা পেতে গ্রাহকরা দিনের পর দিন ওই অফিসে ধর্না দিতে হচ্ছে। ভবিষ্যতের জন্য জমাকৃত টাকা নিয়ে বীমা প্রতিষ্ঠানটি উধাও হয়ে যেতে পারে এই আশঙ্কায় দিন পার করছেন গ্রাহকরা।
জানা গেছে- ২০১৪ সাল থেকে নওগাঁ শহরের হোটেলপট্টিতে আমিন মার্কেট এর তৃতীয় তলায় প্রগেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড এর অফিস। ভবিষ্যতের জন্য শত শত গ্রাহক এই প্রতিষ্ঠানটিতে টাকা সঞ্চয় বা জমা করেছিল। অনেকের বাৎসরিক মেয়াদ পুরণ হয়েছে আবার অনেকের এখনও মেয়াদ পুরণ হয়নি। যাদের মেয়াদ পুরণ হয়েছে তারা তাদের সঞ্চয়কৃত টাকা নেয়ার জন্য অফিসে গিয়ে ধর্না দিচ্ছে। প্রতিদিনই গ্রাহকরা গিয়ে ধর্না দিচ্ছে। কিন্তু গ্রাহকদের টাকা না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে তালবাহানা করা হচ্ছে। আজ নয় কাল বলে সময় পার করছে অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। এতে করে গ্রাহকরা বিড়ম্বনা ও ভোগান্তীরা মধ্যে পড়তে হয়েছে।
জেলার রানীনগর উপজেলার হরিশপুর গ্রামে কৃষক সাজেদুল ইসলাম। ভবিষ্যতে সংসারে উন্নয়নের জন্য এ বীমাতে টাকা জমানো শুরু করেছিলেন। গত ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর তার মেয়াদ পুর্ণ হয়। বীমাতে জমাকৃত টাকা পাওয়ার আশায় দিনের পর দিন অফিসে গিয়ে ধর্না দিচ্ছেন।
ভুক্তভোগী সাজেদুল ইসলাম বলেন- বছরে ১০ হাজার ৩৭৩ টাকা হিসেবে ১২ বছর মেয়াদী বীমা করেছি। যেখানে আমার প্রায় ১ লাখ ২৪ হাজার টাকার মতো জমা হয়েছে। মেয়াদ পুর্ণ হয়েছে আরো প্রায় ১ বছর ৫ মাস আগে। মেয়াদ পুরন হওয়ার পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অফিসে আসতে বলা হয়। তারপর থেকে অফিসে এসে জমাকৃত টাকা পেতে ধর্না দিতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে এসে অফিস বন্ধ থাকে। অফিস থেকে বলা হচ্ছে আরো এক বছর পরে আসার জন্য। নিজের জমাকৃত টাকা পেতে এতো ঘুরতে হবে কেন। ভবিষ্যতে সংসারে উন্নয়নের জন্য অনেক কষ্ট করে টাকাগুলো জমিয়েছি। এখন ভয় হচ্ছে যদি অফিস সবকিছু নিয়ে পালিয়ে যায় তাহলে কি হবে।
আরেক ভুক্তভোগী নওগাঁ শহরের চকদৌলত মধ্য সাহপাড়া মল্লার বাসীন্দা শাহাজান বাদশা। তিনি বলেন- মা সাজেদা বেগমের নামে বছরে ৪ হাজার ৪৫০ টাকা হিসেবে ১২ বছরের জন্য বীমা করা আছে। মেয়াদ পুরন হয়েছে ২০২৩ সালের মে মাসে। প্রায় ৫৫ হাজার টাকা জমা হয়েছে। জমাকৃত টাকা পাওয়ার জন্য ব্যাংকে হিসাব খুলতে বলা হয়েছিল। একটি ব্যাংকে হিসাব খুলে হিসাব নম্বরটি বীমা অফিসে দেয়া হয়। আজ নয় কাল বলে মাসের পর মাস ঘুরতে হচ্ছে। অফিস থেকে বলা হচ্ছে টাকা নাই এখন দেয়া যাবে না। আরো কিছুদিন পরে আসেন। আমাদের সাথে প্রতারণা করার কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে। আমার মতো অনেক গ্রাহক এসে হয়রানি হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের হিসাবরক্ষক রাহিদুল ইসলাম বলেন- ২০১৪ সাল থেকে শহরের হোটেলপট্টিতে আমিন মার্কেট এর তৃতীয় তলায় বীমার কার্যক্রম করা হচ্ছে। তবে তার আগে শহরের পার-নওগাঁয় অফিস দিয়ে সেখানে কার্যক্রম করা হয়েছিল। করোনা ভাইরাসের আগে গ্রাহকদে টাকা দিতে কোন সমস্যা হয়নি। তবে পরবর্তী সময় থেকে সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা উত্তোরণে আমাদের সুযোগ দিতে হবে।
প্রগেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানি লিমিটেড নওগাঁ সার্ভিসিং সেল এর সহকারি পরিচালক (এএমডি) রহিদুল ইসলাম বলেন- এ অফিসের অধীনে প্রায় পাঁচ শতাধিক গ্রাহক রয়েছে। বর্তমানে কোম্পানি কোন ফান্ড (অর্থ) দিচ্ছে না। ফান্ড পেলে দ্রুত গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। তবে অফিস পালিয়ে যাওয়ার কোন ভয় নেই। করোনা ভাইরাসের পর থেকে প্রতিষ্ঠান অর্থনেতিক ভাবে দুর্দিন যাচ্ছে এবং ভাল সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন- যেসব গ্রাহকদের মেয়াদ পূর্ণ হয়েছে তাদের বিষয় অফিসকে অবগত করা হয়েছে। ফান্ড না পাওয়া পর্যন্ত পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।

Side banner