বান্দরবানে বর্ণাঢ্য আয়োজনে শেষ হলো মারমা সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) জেলা শহরের রাজার মাঠে উৎসব উদ্যাপন পরিষদের আয়োজনে তিনদিনব্যপী জলকেলি উৎসব শেষ হয়।
জলকেলি উৎসবে নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-গানসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্টিত হয়। যুবক যুবতীদের অংশগ্রহণে অব্যহত পানি বর্ষন অন্যদিকে লোকজ সংস্কৃতিসহ স্থানীয় শিল্পীদের মনমাতানো পরিবেশনা পুরো মাঠ জুড়ে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। তবে মূল আকর্ষণ পানি খেলা।পানিভর্তি দুই নৌকার দুইপাশে দাঁড়ানো তরুণ-তরুণী। পরনে ঐতিহ্যবাহী রঙিন পোষাক। বিচারক বাঁশি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মগ দিয়ে নৌকা থেকে পানি তুলে সামনের পক্ষকে একযোগে নিক্ষেপ করছে। আর বিপরীত পক্ষও দেহে পাল্টা জল ছিটিয়ে তার প্রতিউত্তর দিচ্ছে। এভাবেই বান্দরবান শহরের রাজারমাঠে তরুণ-তরুণীরা পানি ছিটানোর মধ্য দিয়ে মৈত্রীপানি বর্ষণে মেতে ওঠেছে মারমা তরুণ-তরুণীরা।
তাদের বিশ্বাস পুরোনো বছরের সব গ্লানি ও দুঃখ জলে মুছে নতুন ভাবে পরিশুদ্ধির হবে। পুরনো বছরের শুদ্ধ জলের মাধ্যমে দুঃখ গ্লানি মুছে ফেলে নতুন বছরটিকে গ্রহন করার নামই জলকেলী উৎসব। যাকে মারমা ভাষায় বলা হয় রিলং পোয়েঃ।
‘মৈত্রী পানি বর্ষণ’ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। এসময় পানি খেলায় অংশ নেয়া যুবক যুবতীদের পানি ছিটিয়ে মৈত্রী পানি বর্ষন অনুষ্টানের সূচনা করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইতালি ও নেদারল্যান্ড এর রাষ্টধুত,পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই,জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি,পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার,সদর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এস এম মাহামুদুল হাসান, প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তাসহ আয়োজক কমিটির সদস্যরা ও দর্শক উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল থেকে সপ্তাহব্যপী বান্দরবানে বর্ষবরণ মাহা সাংগ্রাইং পোয়ে.উৎসব অনুষ্টিত হয়।এই উৎসবকে ঘিরে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,নানা ধরনে খেলাধুলা যেমন তৈলাক্ত বাঁশের আরোহণ, নৌকা বাইচ,রাতে পাহাড়া মহল্লায় পিঠা উৎসব,খিলা খেলা,সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসানোসহ নানা ইভেন্টে ছোট-বড় সবাই অংশনিয়ে থাকেন। সব শেষ আয়োজন করা হয় জলকেলি উৎসব। এতে মারমা শিশু-কিশোর,তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :