ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে কোনোভাবেই থামছে না ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। প্রভাবশালীরা বাঞ্ছারামপুর উপজেলার নদী, খাল-বিল, পুকুর ও ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে দেদাছ বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া রাতের বেলা বালু উত্তোলন করায় ড্রেজারের শব্দ আশপাশের মানুষের রাতের ঘুমও হারাম করে দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় দিনে-রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসনের ওয়ান ম্যান শো হিসেবে কেবল এসিল্যান্ড নজরুল ইসলাম অভিযানে যাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, বাঞ্ছারামপুরের উজানচরের ড্রেজার বাবুলকে কোনোভাবে থামানো যাচ্ছে না। তিনি আওয়ামী সরকার আমল চলে যাবার পর নিজে দল পাল্টে ড্রেজার ও ভেজাল গুড়ের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাঞ্ছারামপুরে বাবুলের নের্তৃত্বে বালু ব্যবসায়ীরা আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে।
দরিকান্দির ড্রেজার মাফিয়া হিসেবে পরচিত সাইফুলের বিষয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় বহু কৃষক।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন গ্রামে নদী, খাল ও কৃষি জমি থেকে দিনরাতে বালু ও মাটি কেটে নিচ্ছেন ভূমিখেকোরা। ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে তারা দ্রুত মাটি কেটে নিচ্ছে।
স্থানীয়রা প্রভাবশালী এসব মাটি ও বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহসিলদারদের কাছে অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা হয়নি। মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে দু’একটি ড্রেজার জব্দ কিংবা সামান্য জরিমানা করলেও বেশিরভাগই ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাঞ্ছারামপুর রূপসদী-ফরদাবাদ সড়কের মাঝামাঝি বিল থেকে দুইটি ড্রেজার দিয়ে গত একমাস ধরে রাতদিন এরশাদ নামে এক ভূমিখেকো মাটি কাটছেন। তার দাবি, এসিল্যান্ডের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে এসব মাটি কাটছেন। এরশাদের মতো উপজেলার ফরদাবাদ, ভেলানগর, দরিকান্দি, ছলিমাবাদ, মিরপুর, আছাদনগর, আকানগর, পাহাড়িয়াকান্দি এলাকায় ড্রেজার দিয়ে সবচেয়ে বেশি দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে ওইসব এলাকার রাস্তাঘাটও।
মোস্তফা মিয়া বলেন, আমি এসিল্যান্ড স্যারকে বলে যেই লোকের জায়গা ভরতেছি তার জমিই কাটতেছি।
এ ব্যাপারে রূপসদী ভূমি অফিসের তহসিলদার বলেন, আমি নিজে গিয়ে মোস্তাফার বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়ে আসার পরেও সে ড্রেজার চালাচ্ছে। এটা আমি এসিল্যান্ড স্যারকে জানিয়েছি। তিনি অভিযান চালিয়ে ড্রেজার জব্দ করেছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তেজখালির এমরান ও ফরদাবাদ ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত তহসিলদার হেলাল উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়ে ফরদাবাদ রবির বাজারের পূর্বপাশে তিতাস নদী থেকে বালু উত্তোলনের ড্রেজারটি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। আবার যেহেতু চালু করেছে এখনি তাদের বন্ধ করতে বলব। তাছাড়াও রূপসদী বিলের ড্রেজার কিংবা ছলিমাবাদ ইউনিয়নের যেখানেই ড্রেজার থাকুক বন্ধ করে দেব।
যোগাযোগ করা হলে বাঞ্ছারামপুরের এসিল্যান্ড নজরুল ইসলাম বলেন, উজানচরের ভেজাল গুড় ও বালু উত্তোলনকারীরা বেশ শক্তিশালী। আমি ফোর্স বাড়িয়ে শীঘ্রই অভিযানে যেয়ে ব্যবস্থা নেব। আমার নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ অবৈধ ড্রেজার চালালে ও কৃষি জমি বিনষ্ট করলে আমাকে জানালে ব্যবস্থা নিবো।
আপনার মতামত লিখুন :