দেশের উত্তরের সীমান্তঘেষা জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নতুন বছরের শুরুতে ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডার দাপটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ জনপদের মানুষজন।
শুক্রবার এই প্রথম বারের মতো তাপমাত্রা নামলো ৯ ডিগ্রির ঘরে। এ তাপমাত্রায় জেলা জুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে ।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ তাপমাত্রায় জেলা জুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে।
এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় রেকর্ড হয় ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। গত দেড় মাস ধরে এই অঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস উঠানামা করছে এ উপজেলায়।
হিমেল হাওয়ার সঙ্গে সাথে ঝরছে হিম শিশির। এমন পরিস্থিতিতে দুর্ভোগে পড়েছেন ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষ।
স্থানীয়রা বলছেন, তীব্রশীতের কারণে ঘরের ফ্লোর, আসবাবপত্র, বিছানাপত্রসহ সবকিছু যেন বরফ হয়ে উঠে। ভোরে উঠে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হয়ে উঠে।
ফুলবাড়ী উপজেলার দিন মজুর কাশেম আলী ও নজরুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের কারণে শীতটা মনে হচ্ছে অনেক বেড়েছে। কনকনে শীতের কারণে ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। অথচ জীবন জীবিকা তাগিদে এই হাঁর কাঁপানো শীতে আমাদের কাজ করতে হয়।
বালারহাট এলাকার ভ্যান চালক জহুরুল ইসলাম ও দ্বিনেশ চন্দ্র রায় জানান, তিন-চার দিন ধরে ভোর থেকে সকাল ১১ টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা। এই সময় কাজে বের হতে খুবই কষ্ট হয়। কিন্তু কি করবো, পরিবারের কথা চিন্তা করেই ক্ষ্যাপ মারতে হয়। দিনশেষে জ্বর-সর্দির মতো রোগে ভুগতে হচ্ছে আমাদের।
এদিকে শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্তের পরিমাণ। প্রতিদিনই উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, আজকেও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে উত্তরের জনপদ। জেলাজুড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শুক্রবার সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ৯ জানুয়ারী পর্যন্ত মৃদু শৈত্যপ্রবাহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :