binodonerpadmaful
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১
কর্মহীন হতদরিদ্র মানুষ  

ফুলবাড়ীতে কর্মসৃজন প্রকল্পের নেই বরাদ্দ 


বিনোদনের পদ্মফুল | বিপুল মিয়া, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম ফুলবাড়ীতে কর্মসৃজন প্রকল্পের নেই বরাদ্দ 

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পে মেলেনি বরাদ্দ। অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় কর্মসৃজন কর্মসূচি (ইজিপিপি) টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্প এখনও চালু হয়নি। ফলে হতদরিদ্র পরিবার গুলো পড়েছেন বিপাকে। পাশাপাশি স্থবির হয়ে গেছে গ্রামীণ অবকাঠাম উন্নয়ন। 
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৬০ জন অতিদরিদ্র মানুষ কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতাভুক্ত ছিলেন। প্রকল্পের সুবিধাভোগী এসব শ্রমিকেরা গ্রামীণ জনপদের রাস্তা, সেতু, কালভার্ট, মাঠ, মসজিদ-মন্দিরে মাটি ভরাট এবং পুকুর সংস্কারে কাজ করতেন। প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন সুবিধাভোগী শ্রমিকরা। 
শ্রমিকদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, আমাদের নিজ এলাকায় আমরা মাটি কাটার কাজ করতাম। এই প্রকল্প যখন চালু ছিল আমাদের যেমন কাজের সুযোগ হয়েছিলো পাশাপাশি এলাকারও উন্নয়ন হয়েছে। আমরা সাধারণ শ্রমিক দৈনিক ৪০০ টাকা এবং আমাদের সর্দার ৪৫০ করে পারিশ্রমিক পেতাম। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আমরা চরম বিপাকে পড়েছি।
এছাড়াও টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের আওতায় উপজেলার হাজার হাজার হতদরিদ্র মানুষের কাজের সুযোগ হত। এসব প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের কথা বলছেন সাধারণ মানুষজন। প্রকল্প এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, কর্মসৃজন কর্মসূচি, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের শ্রমিকদের মাধ্যমে ঈদগা মাঠ, গ্রামীণ রাস্তা, সেতু, কালভার্টে মাটি ভরাটের মধ্য দিয়ে এলাকার দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এসব প্রকল্প বন্ধ থাকলে গ্রামীণ জনপদে উন্নয়ন একেবারে থমকে যাবে। পরবর্তীতে ভোগান্তি বাড়বে। 
উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শরিফুল আলম সোহেল বলেন, আমার ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার রাস্তাঘাট প্রতি বছরই বন্যায় কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব রাস্তাঘাট সংস্কারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগি শ্রমিকরা বড় ভূমিকা পালন করে। সরকারি প্রকল্প গুলো চালু না থাকলে হতদরিদ্র মানুষ ও গ্রামীণ জনপদের অবস্থা বেহাল হবে।  গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কারে আবারও সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির প্রকল্প গুলো দ্রুত চালু করা প্রয়োজন বলে মনে করি। 
ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, দরিদ্র মানুষ গুলোর হাতে যখন কাজ ছিল না ঠিক তখনই সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি প্রকল্প গুলোর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষগুলো কাজ পেত। সরকারি এসব প্রকল্প না থাকার কারণে দারিদ্রতা বাড়ছে। মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। আর উন্নয়ন প্রকল্প সরকারিভাবে এই অর্থ বছরে এখনো শুরু হয় নাই। আমরাও অপেক্ষায় আছি। সিদ্ধান্ত হলে আমরাও বাস্তবায়নে সহযোগিতা করব। 
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত বলেন, কর্মসৃজন কর্মসূচি প্রকল্পের মেয়াদ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এই প্রকল্প নতুন করে চালুর কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কিনা তা এখন পর্যন্ত আমার জানা নাই। এছাড়া সামাজিক উন্নয় প্রকল্প গুলো বাস্তবায়নে কোন বাজেট নাই। এসব প্রকল্প কি কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে তা জাতীয়ভাবে যারা নীতি নির্ধারক আছেন তারাই ভালো জানেন। তবে আমি যতটুকু জানি টিআর, কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্প পুনরায় চালু করা হতে পারে।

Side banner