ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কম থাকায় নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে সকাল থেকে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করেছে। এ কারণে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকগুলো নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি।
রবিবার (৮ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কোনো ফ্লাইট সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করেনি। এ সময়ের মধ্যে শিডিউল অনুযায়ী সকাল সোয়া ৭টায় অবতরণ করে সোয়া ৮টায় বেসরকারি কোম্পানির ফ্লাইট এয়ার অ্যাস্টা ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করতো। ফলে ওই ফ্লাইটের ঢাকাগামী অর্ধ শতাধিক যাত্রী সৈয়দপুর বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন। তবে কোনো ফ্লাইট বাতিলের আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার সকাল ৬টায় জেলার তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হাকিম জানান, আজ সকাল ৬টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিমান চলাচলের জন্য কমপক্ষে ২০০০ মিটার ভিজিবিলিটি (দৃষ্টিসীমা) প্রয়োজন হলেও সেখানে বর্তমানে (সকাল সাড়ে ১০টা) বিরাজ করছে মাত্র ৩০০ মিটার। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির উন্নতি হলে উড়োজাহাজ চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে।
প্রতিদিন সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে গড়ে ১৫ থেকে ১৬টি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এর মধ্যে দুপুর ১২টার আগে ৩টি ফ্লাইট চলাচল করে। শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে প্রায়ই বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
বেসরকারি বিমান সংস্থার ঢাকাগামী যাত্রী আনোয়ার হোসেন বলেন, সকাল ৭টা থেকে বিমানবন্দরে অবস্থান করছি। ঘন কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় সময়মতো ঢাকায় যেতে পারছি না। ঢাকায় ব্যবসায়িক কাজ শেষে সন্ধ্যার ফ্লাইটে ফেরত আসার টিকিট করা রয়েছে। দুই দিন আগে টিকিট করা হয়েছিল এবং গতকাল এতো কুয়াশা ছিল না। তাই টিকিট বাতিল করিনি।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক একেএম বাহাউদ্দিন জাকারিয়া বলেন, এখনো কোনো ফ্লাইট বাতিল করা হয়নি। ঘন কুয়াশা কেটে ফ্লাইট চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় দৃষ্টিসীমা হলে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হবে।
এদিকে শনিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ে পুরো নীলফামারী। দৃষ্টিসীমা কম থাকায় মহাসড়কে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করেছে। ফলে দূরপাল্লার বাস ও ট্রাকগুলো নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি।
ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে ছেড়ে আসা নাবিল পরিবহনের চালক আব্দুল মজিদ বলেন, সকাল ৭টায় নীলফামারীতে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে গাড়ি কম গতিতে চালাতে হয়েছে। এতে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেড় ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে।
এদিকে তীব্র শীতের কারণে অভাবী ও ছিন্নমূল মানুষেরা ভোগান্তিতে পড়েছে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এখনো কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়নি। বিশেষ করে জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা নদী অববাহিকার লোকজন বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। এছাড়া বেড়েছে শীতজনিত রোগব্যাধি। জেলা সদরসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শিশু ও বয়স্করা সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। চিকিৎসকেরা শীতে স্বাস্থ্যসচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।
আপনার মতামত লিখুন :