গাভীর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত বিদেশী নেপিয়ার ঘাস চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। তাই এ ঘাস জমি ও রাস্তার ধারে ঘাস করছে চাষিরা । জমিতে চাষ করে অধিক লাভবান হচ্ছে এবং সড়কের ধারে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে বাড়তি আয় করেছেন তারা ।
নীলফামারীর সৈয়দপুরে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে খামারীদের কাছ থেকে জানা গেছে নেপিয়ার ও পাংচং ঘাস দুগ্ধ জাত গাভীকে খাওয়ালে বেশী পরিমাণে দুধ পাওয়া যায়। এছাড়াও গাভীন গরু কে এ ঘাস খাওয়ালে বাছুর অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাস্থ্যবান হয়। এসব কারণে এসব ঘাসের জনপ্রিয়তা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই অধিকাংশ গ্রামে জমিতে ও রাস্তার ধারে এই ঘাস চাষ করা হচ্ছে।
নেপিয়ার জাতের ঘাস দুগ্ধজাত গাভীকে খাওয়ালে বেশি পরিমাণ দুধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া গাভীকে এ ঘাস খাওয়ালে বাছুর অন্ধত্ব থেকে রক্ষা পায় এবং স্বাস্থ্যবান হয়। এসব কারণে এ ঘাস প্রচলিত ঘাসের তুলনায় জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ঘাস দ্রুত বর্ধনশীল,সহজে জন্মে,পুষ্টিকর, সহজপাঁচ্য ও খরা সহিষ্ণু। এ ঘাস একবার রোপন করলে তিন থেকে ৬ বছর পর্যন্ত এর ফলন পাওয়া যায়। এটির চাষ বলা চলে সারা বছর করা যায়। উঁচু,ঢালু,অনাবাদি জমি যেমন বাড়ীর পাশে,নদীর তীরে, পুকুর পাড়ে,রাস্তার ধারে এবং বেরীবাঁধ এলাকা ছাড়াও সমতলে এটির চাষ হয়ে থাকে।
সৈয়দপুর পৌর এলাকার কাজী পাড়ার মোঃ মিন্টু জানান, তিনি ১৫ বছর থেকে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে আসছেন। এ বছর ৮ বিঘা জমিতে ঘাস চাষ করেছেন। ফলন বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে তার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। তিনি ঘাস বিক্রি করবেন ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এতে তার লাভ হবে প্রায় দ্বিগুন। পাইকারি এবং খুচরায় বিক্রি করেন। এমন কথা জানালেন আরেক চাষি হুসাইন। তিনি এবার আবাদ করেছেন তিন বিঘা জমিতে। তিনিও ১০ বছর থেকে এ ঘাসের চাষ করে আসছেন। তিনি বছরে ৬ বার ঘাস কর্তন করেন বলে জানান।
উপজেলার ধলাগাছ গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলী জানান, আমার জমি স্বল্পতার কারণে আমি রাস্তার ধারে নেপিয়ার ঘাস চাষ করে আসছি। নিজের জমির পাশাপাশি রাস্তার দুই ধারে এ ঘাস চাষ করা হচ্ছে। তাদের দেখাদেখি অনেকেই এখন এ ঘাস চাষ করে লাভবান হচ্ছে। ঘাসের চাহিদার বৃদ্ধি পাওয়ায় অনেকে আগ্রহী হয়ে ঘাস চাষে ঝুঁকে পড়ছে। নেপিয়ার ঘাস চাষে লাভবান হওয়ায় অনেকে আবার বাণিজ্যিকভাবে ধানের জমিতে ঘাস চাষ শুরু করেছে। তিনি আরো জানান, এ ঘাস একবার বপন করলে আর বপন করতে হয় না। ঘাসের গোড়া থেকে ১ ফিট উপরে কাটলে পরে সেখান থেকে আবার ঘাস জন্মে। কৃষকের বাড়তি আয়ের উৎস তৈরিসহ দুগ্ধ উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এই ঘাস ছোট ছোট প্রতি মুঠি ১০ টাকা ধরে বিক্রি করছে । ঘাস কিনতে আসা ক্রেতারা জানান এখান থেকে আমরা প্রতিদিন দুই তিনশ টাকার করে ঘাস কিনে নিয়ে যাই।
পথচারী রাজ্জাক হোসেন বলেন, আমি প্রতিনিয়ত এ পথ দিয়ে হাট-বাজারে যাতায়াত করে থাকি। রাস্তাটি নতুন পাকা হওয়ায় রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় আগাছা ও বিভিন্ন জঙ্গল জম্মে থাকে। জাহাঙ্গীর হোসেন সেসব আগাছা ও জঙ্গল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে এবার নেপিয়ার ঘাস চাষ করেছেন। তিনি একজন পরিশ্রমী কৃষক। তিনি সবসময় তার চাষাবাদের জমিতে সময় দিয়ে থাকেন। তিনি এবার রাস্তার পাশে নেপিয়ার ঘাস লাগিয়ে রাস্তাটিকে সাজিয়ে তুলেছেন।
য়ৈদপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ধীমান ভুবন জানায় এবার উপজেলায় সাড়ে ৭ হেক্টর জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ হয়েছে। দিন দিন এ ঘাসের চাহিদা বৃদ্ধি পাঁচ্ছে। খামারিদের কাছে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :