binodonerpadmaful
ঢাকা সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

গাইবান্ধায় সরিষা ফুলের হলুদ গালিচায় প্রকৃতি মেলেছে পাখা


বিনোদনের পদ্মফুল | শাহিন নুরী, গাইবান্ধা ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪, ০৩:৩৬ পিএম গাইবান্ধায় সরিষা ফুলের হলুদ গালিচায় প্রকৃতি মেলেছে পাখা

দিগন্তজুড়ে সরিষা ফুলের সমারোহ। দু’চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ আর হলুদ। আঁকাবাঁকা রাস্তার দু’পাশে প্রকৃতি যেন সেজেছে আপন মহিমায়। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে বলছিলাম, গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের তুরকার বিলের কথা। ঋতু বৈচিত্র্যের এই বাংলায় বছরের বিভিন্ন সময় বর্ণিল রঙ আর অনাবিল সৌন্দর্যে ভরে ওঠে এই তুরকার বিল। এ বিল কখনো রূপালী জলে ভরে যায়, কখনো বা সোনালী ধানের শীষে লাগে বাতাসের দোল। বর্ষায় থাকে পানিতে পরিপূর্ণ। বর্ষা শেষে পানি নেমে যায়, ঠিক তখনই কৃষকেরা বিস্তৃত মাঠে কার্তিক মাসে বপন করেন সরিষা। অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফুল আসে, থাকে পৌষ মাস পর্যন্ত। 
বর্তমানে এই বিল সরিষা ফুলে পরিপূর্ণ। হলুদের ছোঁয়া যেন মন কেড়ে নেয়। ক্ষেতের দৃষ্টিনন্দন এমন অপরূপ দৃশ্য দেখতে এলাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসেন এখানে। এটি যেন হয়ে উঠছে বিনোদন কেন্দ্র। 
সরেজমিনে দেখা যায়, তুরকার বিলসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল ও নদীর চর এলাকাগুলো সরিষা ফুলের অপরূপ শোভায় হলুদ গালিচা বিছিয়ে যেন অপরূপ সাজে সজ্জিত করেছে পল্লীর প্রকৃতি। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে বাড়ছে প্রকৃতি প্রেমীদের আনাগোনা। প্রজাপতির দল ছুটে বেড়াচ্ছে ফুলে ফুলে। মৌমাছির ভনভনানিতে মুখর সরিষার বিস্তৃত মাঠ। ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত হাজারো মৌমাছির দল। সরিষার ভালো ফলনের আশায় কৃষকদের মুখেও ফুটেছে সোনা রাঙা হাসি।
খোলাহাটী ইউনিয়নের কৃষক আমির হোসেন তার নাতিকে নিয়ে মাঠে কাজ করে ফিরছিলেন। তিনি বলেন, সরিষার আবাদ বাপ-দাদার আমল থেকে করে আসছি। আমরাও করি। এবার ৩ বিঘা জমিতে সরিষা লাগানো হয়েছে। ভালো ফুল এসেছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিকেলে মানুষ ঘুরতে আসেন। তবে আগে তেমন মানুষ আসতো না। গত দুই বছর ধরে বেশি আসতে শুরু করেছে। 
সরিষা ক্ষেতের এ মনোমগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে আসা আবু কায়সার শিপলু, লাল চান বিশ্বাস সুমন, রুপম, এ বিলের দিগন্ত জোরা সরিষা ক্ষেতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্যে চোখ জুড়িয়ে যায়। এ দৃশ্য উপভোগ করতে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন, ছবি তোলেন। বিশেষ করে শুক্রবারে দর্শনার্থীরা স্বপরিবারে আসেন। সরিষা ক্ষেতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে তারা ছবি তোলেন। এতে কিছু সরিষা নষ্টও হয়ে যায়। তারপরও কোনো কৃষক তাদের বাঁধা দেন না। এখানকার কৃষকেরা বরং আনন্দ পান এবং উপভোগ করেন এ নয়নাভিরাম দৃশ্য।
গাইবান্ধা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছর গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ১৭৯ হেক্টর। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছিল ১৫ হাজার ২০০ হেক্টর। এ বছর জেলায় সরিষা চাষে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার ২১৫ হেক্টর। এর মধ্যে অর্জিত হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫৪ হেক্টর।

Side banner